শিল্পকলার এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটারে হয়ে গেল চাঁন মহুয়ার কিসসার মঞ্চায়ন। “চাঁন মহুয়ার কিচ্ছা” নানা আঙ্গিকে দেখা ময়মনসিংহ গীতিকা’র খুব চেনা একটা গল্পের নব-নাট্যরূপ। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের প্রযোজনা, নির্দেশনায় ইউসুফ হাসান অর্ক। প্রযোজনা দেখেই বোঝা যায় নির্দেশকের শক্তিমত্তা মিউজিকে। সেজন্যই হয়তো তার নাটকগুলোতে ঘুরে ফিরে আসে বাংলার চিরায়ত গীত নির্ভর অভিনয়রীতি। চাঁন মহুয়ার পালা মূলত মৈমনসিংহ গীতিকার মহুয়া পালার নবরূপায়ণ। গাহনাভিনয় রীতিতে মঞ্চে উপস্থাপন করছেন নির্দেশক। তাই গানই নাটকের কাহিনী বর্ননায় মুখ্য ভূমিকা রেখেছে। চাঁন মহুযার কিচ্ছা এ রীতিতে অভিনীত গীতনির্ভর একটি পরিবেশনা। সেট,লাইট, প্রপসে কোন আড়ম্বর নেই, সব চমক কলাকুশলীদের পরিবেশনায়। প্রযোজনার ছোট ছোট বিষয় মুগ্ধতা ছড়িয়েছে। মূল অভিনেতা অভিনেত্রীরা, ভীষণ সুন্দর এক্সপ্রেশন, বডি ল্যাংগুয়েজ! নেচে গেয়ে অভিনয় করলো পুরো ১ঃ৪৫ মিনিট বিরতিহীন।গানের দলে লিড করছিলো যে মেয়েটি, তার গলার কি তেজ! আর ছেলেটা, একজনেই কতগুলো পারকাশন ইন্সট্রুমেন্ট বাজালো, গাইলো, উঠে এসে অভিনয়ও করলো! পুরো টিমের এনার্জি লেভেল মারাত্মক! আর যারা ছিলো, প্রত্যেকে নিজের কাজটা সুচারুভাবে করেছে। বনের ভেতর পাখপাখালীর শিষ বা হাতের তালিতে পাখির ডানা ঝাপটানোর শব্দ, মহুয়ার পায়ের স্টেপের সাথে সাথে নূপুরের শব্দ এরকম নানা আবহ তৈরি করে চলেছে সবাই মিলে।
একজন দর্শকহিসেবে নাটকটা দেখতে বসে প্রাণ খুলে হেসেছি,আবার, মঞ্চে শিল্পীদের চোখের জল দেখে মন কেঁদে উঠেছে বারবার।