১৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ■ ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জনসংস্কৃতির সাড়া জাগানো নাটক- ”দ্য ওয়েস্টল্যান্ড- এ জার্নি”- আজ বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে

||

বিনোদন গল্প.কম

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Print
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মূল মিলনায়তনে আজ শুরু হচ্ছে দুদিনব্যাপী ইন্টারন্যাশনাল ডিজএবিলিটি আর্ট ফেস্টিবল ২০২৪। আজ থাকছে পাঁচটি নাটক। সর্বশেষ নাটকটি প্রদর্শন করবে কলকাতার জনসংস্কৃতি। রাত আটটায় শুরু হতে যাওয়া এ নাটক জনসংস্কৃতির সাড়া জাগানো নাটক- ‘দ্য ওয়েস্টল্যান্ড- এ জার্নি’। বলা চলে এই নাটকটির মাধ্যমেই ইন্টারন্যাশনাল শব্দটির যথার্থতা তৈরি হলো। কারণ দুদিন ব্যাপী উৎসবের বাকি নয়টি দলই বাংলাদেশের।
 এ নাটকের নির্দেশক ডঃ সঞ্জয় গাঙ্গুলী। তার মতে- ‘দ্য ওয়েস্টল্যান্ড মূলতঃ টি এস ইলিয়ট বিরচিত এক দীর্ঘ কবিতা। যে কবিতায় কবি আঁকতে চেয়েছেন প্রথম বিশ্বযুদ্ধোত্তর পাশ্চাত্যের প্রাণহীন জীবন, অসার বাস্তব এবং সভ্যতার অহং-এর আস্ফালনের অন্ধকারের বিপরীতে এক আলোর পথ।’
পাশ্চাত্যের এ কবিতাকে নিয়ে নাটক নির্মাণ করতে গিয়ে ড. সঞ্জয় গাঙ্গুলী এর সাথে মিল খুঁজে পেয়েছেন প্রাচ্যের দর্শনের। তিনি তার এ নাটকে দেখিয়েছেন আজ থেকে ১০০ বছরের কিছু বেশি সময় পূর্বের কবি তথা দার্শনিক ইলিয়ট যখন পাশ্চাত্যে চিন্তার প্রকাশ ঘটাচ্ছেন ঠিক তখন এই প্রাচ্যভূমেও জন্ম নিচ্ছে রবীন্দ্রনাথের ‘রক্তকরবী’ সহ বেশ কিছু নাটক। যেসব নাটকেও রয়েছে বিধ্বস্ত অন্ধকার থেকে বেরোবার পথ খোঁজার প্রয়াস। প্রাসঙ্গিকভাবেই, এক ঘন্টা দশ মিনিটের প্রযোজনা “দ্য ওয়েস্ট ল্যান্ড – এ জার্নি’-এর সাথে ড. সঞ্জয় গাঙ্গুলী টি এস ইলিয়টের কবিতার সাথে একীভূত করে দিয়েছেন রবীন্দ্রনাথ, বুদ্ধদেব বসু, এবং জসিম উদ্দীনের চেতনা, দর্শন আর ভাবনাকে। আর তাই, ড. সঞ্জয় গাঙ্গুলীর এ প্রযোজনা হয়ে উঠেছে একঝাঁক অভিনেতা, সংগীতশিল্পী, কলাকুশলীর দূর্দান্ত উপস্থাপনায় এক নবতর ক্যানভাস। এ নাটকে বিধ্বস্ত সময়, অচিরেই পৌঁছে যায় শান্তির নিমগ্ন পথে আরো গভীর অন্বেষণের আকাঙ্ক্ষায়।
এ নাটকের অভিনেতা অভিনেত্রীদের অধিকাংশই শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী। কেউ কেউ যাকে বলে থাকেন ভিন্ন উপায়ে স্বাবলম্বী। তবে নাটক দেখে কিন্তু একবারও মনে হবেনা যে, এ প্রযোজনার অভিনেতা অভিনেত্রীরা শারিরীক প্রতিবন্ধাত্বের শিকার। কারণ তাদের অন্তরচোখ এতটাই শানিত যে তারা দর্শককে যা দেখাতে চান ঠিক ঠিক দেখিয়ে দিতে পারেন।
ব্রিটিশ কাউন্সিল ও ঢাকা থিয়েটার এর আয়োজনে “ইন্টারন্যাশনাল ডিসেবিলিটি আর্ট ফেস্টিভাল ২০২৪” এর এ নাটকটি যে কেউ দেখতে পাবেন বিনা টিকিটে। আবারও বলছি- শারিরীক প্রতিবন্ধকতা কে জয় করে অদম্য শিল্পীরা যে অভিনয় করেছে এ নাটকে, তা এক কথায় মনোমুগ্ধকর।  ডঃ সঞ্জয় গাঙ্গুলী ছাড়া এ নাটকের অন্যান্য কলাকুশলীরা হলেন- সুভাষ দে (অন্ধ শিল্পী, শিলিগুড়ি), সুমিতা হালদার (অন্ধ শিল্পী, শিলিগুড়ি), শিবু প্রসাদ ভার্মা (অন্ধ শিল্পী, কলকাতা), মন্টু দত্ত (অন্ধ শিল্পী, কলকাতা), জনার্ধন চৌধুরী (অন্ধ শিল্পী, কলকাতা), নবকুমার কর্মকার (অন্ধ, সঙ্গীতজ্ঞ, কলকাতা), অমর কার্যপুত্র (অন্ধ, সঙ্গীতজ্ঞ, কলকাতা), সুদীপ মন্ডল (শিক্ষা প্রতিবন্ধী শিল্পী, বাসর কুলপি), সৌনক গৌতম (শিক্ষা প্রতিবন্ধী শিল্পী, কলকাতা), সম্রাট মন্ডল প্রতিবন্ধী মালদা), অতসী ঘোড়াই (শিল্পী, বাসর কুলপি), রতœা সিংহ বধির শিল্পী, দিগম্বরপুর গ্রাম), স্বরূপা দাস প্রতিবন্ধী হুইলচেয়ার ব্যবহারকারী শিল্পী, বর্ধমান), রঞ্জিতা রায় (শিল্পী, কলকাতা), সুভোজিৎ ঘোষ (শিল্পী, কলকাতা), অমর মিশ্র (শিল্পী, কলকাতার বাইরে), জয়ন্ত সাহা (সঙ্গীতশিল্পী), গোপাল সাহা (সঙ্গীতশিল্পী), সবুজ চৌধুরী (শিল্পী), স্বপ্না দাস (শিল্পী), পৌষালী দাস (শিল্পী), তিতির মুখোপাধ্যায় (সঙ্গীত ও ভিডিও অপারেটর), ঝন্টু সরদার (মিউজিক ও ভিডিও অপারেটর), অরিন্দম বর্মন বধির (শিল্পী), গৌতম বোস (ডকুমেন্টারি চলচ্চিত্র নির্মাতা), ছবি নাথ (দোভাষী), সাধন পারুই (আলো ও শব্দ) এবং অয়ন জোয়ার্দার (এডিটিং, ডিজাইন, মিউজিক, কস্টিউম, স্টেজ-ক্র্যাফট, সহ-পরিচালক)। আগ্রহীরা এ নাটকের স্বাদ নিতে চাইলে আজ সদলবলে চলে আসুন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মূলমঞ্চে। চাইলে অন্য নাটকগুলোও দেখে নিতে পারবেন।

নিউজটি ‍শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

আরো খবর